উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে কক্সবাজার, রাঙামাটি ও ভোলায় ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গাছপালা উড়ে গিয়ে ও ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার
ঘূর্ণিঝড় মোরা’র আঘাতে কক্সবাজারে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চকরিয়ায় গাছ চাপায় মারা গেছেন চার জন ও কক্সবাজার পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে একজন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার আহমদ।
বখতিয়ার জানান, চকরিয়ায় গাছ চাপা পড়ে রহমত উল্লাহ (৫০), সায়রা খাতুন (৫৫), আবদুল হামিদ (৩০) ও শাহানা আকতার (১৩) নামের চার জনের মৃত্যু হয়। রহমত উল্লাহ ডুলাহাজারা পূর্ব জুমখালী এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং সায়রা খাতুন বড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকার মৃত নুরুল আলমের স্ত্রী।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত )কামরুল আজম জানান, নিহত আব্দুল হামিদ পেকুয়া উপজেলার মোজাফফর আহমেদের ছেলে ও শাহানা আক্তার কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের মধ্যম গজারিয়ার শাহ জাহানের মেয়ে।
রাতে বাতাসে গাছ ভেঙে বাড়িতে পড়লে এ চার জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বিভ্ন্নি স্থানে আহত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
অপরদিকে কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে এসে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মরিয়ম বেগম (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি নুনিয়ারছড়া এলাকার বদিউল আলমের স্ত্রী। কক্সবাজার পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, আগে থেকেই শারিরীকভাবে তিনি দুর্বল ছিলেন।
রাঙামাটি
মোরা’র আঘাতে রাঙামাটিতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- রাঙামাটির আসাম বস্তির নারকেল বাগান এলাকার হাজেরা বেগম (৪৫) ও রাঙামাটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ও ভেদভেদি এলাকার মাহিমা আক্তার (১৩)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার মো. তৈয়ব।
নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ঝড়ে হাজেরা বেগমের ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে। এসময় ঘরের ভেতরে থাকা হাজেরা বেগম গাছ চাপায় নিহত হন ও তার ছেলে জুনায়েদ (৫) আহত হয়। অন্যদিকে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে মাহিমা নিহত হয়। এসময় মাহিমা ছাড়া কেউ ঘরে ছিল না।
ভোলা
ভোলার মনপুরা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মায়ের কোলে এক বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কলাতলীর চর সিপিপি ইউনিট টিম লিডার মো. নাজিমউদ্দিন শিশু মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কলাতলীর চর সিপিপি ইউনিট টিম লিডার মো. নাজিমউদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা আতঙ্কে স্থানীয় আবাসন বাজার থেকে ছালাউদ্দিনের স্ত্রী জরিফা খাতুন তার এক বছর বয়সি ছেলে রাশেদমনিকে কোলে নিয়ে সোমবার রাত ১টার সময় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। মনির বাজারের কাছে মনপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা বাতাসে শিশুটির ঠাণ্ডা লেগে যায়। ঠাণ্ডায় শিশুটি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথেই মারা যায়।
এ বিষয়ে কলাতলী চরের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ছালাউদ্দিন জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে বৃষ্টি ও বাতাসে ঠাণ্ডা লেগে শিশুটি মায়ের কোলই মারা যায়।
মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমানতউল্যাহ আলমগীর বলেন, কলাতলীচরে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় মায়ের কোলে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি শিশুটি আগে থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।