মোঃ নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
সাতকানিয়ায় কার্তুজের গুলি দিয়ে জাহিদ হাসান নামের এক সিএনজি চালককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন। গত ২৭ মে শনিবার সকাল ১১ টায় উপজেলার চরতী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাহিদ দুরদুরী মধ্যমপাড়া এলাকার জাফর আহমদের ছেলে। পুলিশের তিনদিনের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসলে পালিয়ে যায় ঘটনায় জড়িত মো. ছাদেকসহ তার সহযোগীরা।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি.) মোঃ রফিকুল হোসেন জানান, চরতী দুরদুরী এলাকায় যুবলীগ কর্মী মো. ফারুকের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল স্থানীয় বাসীন্দা মো. ছাদেকের সাথে। তারা একে অপরের আত্মীয়। বিরোধকে কেন্দ্র করে গত শনিবার রাতে ফারুকের উপর হামলা করে ছাদেকের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক। খবর পেয়ে রাতেই তাৎক্ষনি পুলিশ পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। পরের দিন রোববার সকালে ফারুক যখন ঘটনায় জড়িতদের নামে থানায় এজাহার দায়েরের জন্য আসে, এসময় আমাদের কাছে খবর আসে চরতী ইউনিয়ন পরিষদে ১২ রাউন্ড কার্তুজের গুলিসহ জাহিদ হাসান নামের একব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয়রা। পুলিশ সেখানে গেলে ছাদেক ১২ রাউন্ড গুলি উপস্থাপন করে পুলিশকে দেয় এবং বলে এ গুলি জাহিদের কাছে পাওয়া যায়। জাহিদকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জাহিদ পুলিশকে জানান, আমি ফারুকের মাছের পজেক্টে কাজ করি এবং ফাঁকে ফাঁকে তার সিএনজি চালায়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ঐদিন মো. আলীর বাড়ীর সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছাদেকের নেতৃত্বে ৪ জন লোক আমাকে ধরে নিয়ে পরিষদের কক্ষে বসিয়ে রেখে পুলিশকে খবর দেয় আমার কাছে কার্তুজের গুলি পাওয়া গেছে। এ গুলি গুলো দিয়ে মূলত আমাকে ফারুকের গুলি বহনকারী সাজাতে ছেয়েছিলেন তারা। জাহিদের তথ্যমতে পুলিশের তিনদিনের তদন্তে বেরিয়ে আসে প্রকৃত ঘটনা। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় ছাদেকসহ অন্যরা। সাতকানিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল জলিল বলেন, এলাকায় নানান অপরাধে জড়িত ছাদেকের পক্ষে হয়ে গুলি ফারুকের লোকের কাছে পাওয়া যাওয়া ঘটনাটি সত্য বলে পুলিশের কাছে তদবীর করেন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ স্বারথী। এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহিদ হোসেন বাদী হয়ে পানি চরতী এলাকার আব্দুল মাবুদের ছেলে মো. ছাদেক, হত্যা মামলার আসামী মো. ছগির, মোঃ মামুন ও একই এলাকার মাহমুদুলকসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ শহিদুল হক বলেন, এলাকায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফারুর ও ছাদেকের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল বেশ কিছুদিন ধরে। মূলত ফারুককে জড়ানোর জন্য ছাদেক গুলি দিয়ে জাহিদ হাসানকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। ঘটনাটি পুলিশের কাছে সন্দেহ হলে তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসলে ছাদেকসহ তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিম বলেন, পরিষদ থেকে এক সদস্য আমাকে ফোনে জানায় কার্তুজের গুলিসহ এক ছেলে আটক করে ছাদেকসহ কয়েজন লোক পরিষদে নিয়ে এসেছে। তখন আমি পুলিশকে খবর দিলে, পুলিশ এসে ছেলেটিকে নিয়ে যায়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।