শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:

কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডীতে মালেশিয়া নেওয়ার নামে পিতা-পুত্রের ভয়াবহ প্রতারণায় সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে এলাকার সহজ-সরল কয়েকটি পরিবার। আলীশান চাকুরী দেওয়ার নামে চুক্তির মাধ্যমে মালেশিয়া নেওয়ার ভান করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংক নিয়ে পাচার করে দালালের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় ও অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দায়ের করেছে এক ভূক্তভোগী পরিবার।
অভিযোগে জানা যায়, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের উত্তর মাইজ পাড়ার হাফেজ জাফর আলমের পুত্র মৌলানা মঈনুদ্দীন ও তার বাবা জাফর আলম এলাকার বিভিন্ন জনকে ফুঁসলিয়ে স্বল্প খরচে মালেশিয়া পৌছে দেওয়ার কথা বলে পাশর্^বর্তী পোকখালী দক্ষিণ নাইক্ষ্যংদিয়ার মোহাম্মদ হোছনের পুত্র নুরুল হুদাকে ট্যুরিষ্ট ভিসা দিয়ে ৬ মাস পূর্বে ৮ দিনের ব্যবধানে মালেশিয়া পৌছে দেওয়ার চুক্তি করে নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় কথা বলে। এর পর মালেশিয় মুদ্রা রিংগিতের বাহানা দিয়ে অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা নেয়। সরল বিশ^াসে নুরুল হুদা মালেশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে রামু মিঠাছড়ির কথিত ওসমান গণি তাহেরী নামের এক দালাল ইন্দোনেশিয়া নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুঠোফোনে মুক্তিপণ দাবী করে। সে মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করায় উপর্যুপরী নির্যাতন ও মারধর করে বলে এ প্রতিবেদককে জানায়। তার এ নির্যাতনের করুণ কাহিনী মুঠোফোনে শোনে তার নিকটতম আত্মীয় কামরুন নাহার নামের এক মহিলা বিগত ১৩ ফেব্রুয়ারী আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ০৪৮১১২০০৫৮৯৬৭ হিসাব নম্বরে ৯০ হাজার টাকা পাঠালে তাকে ছেড়ে দিয়ে মালেশিয়া পাঠিয়ে দেয়। চুক্তির অতিরিক্ত টাকা দাবীর বিষয়টি মৌলানা মঈনুদ্দীনকে অবহিত করলে সে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার বাবা জাফর আলমকে জানালে মুক্তিপণের টাকাগুলো ফেরত দেবে বলে অঙ্গিকার করে।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, পিতাপুত্রের এ ভয়াবহ মানব পাচারের মত ঘটনায় এলাকার অনেক নিরীহ ব্যক্তি সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে স্থানীয় নূর আহমদের পুত্র মনজুর আলম, ছৈয়দ হোসেনের পুত্র নুুরুচ্ছফাসহ অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, সরকার মানব পাচার রোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেও কোন ধরণের এজেন্সির লাইসেন্স ছাড়াই আলিশান চাকরীর প্রলোভনে বিদেশে নিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া এ দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ খায়রুজ্জামান জানান, এতদ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে যা বর্তমানে বিচারাধীন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলানা মঈনুদ্দীনের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।