বাংলাট্রিবিউন:

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি কামরুল ইসলাম মুসাকে নিয়ে পুলিশ লুকোচুরি খেলছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী পান্না আক্তার। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর (মুসা) খোঁজ চাই। পুলিশ তার খোঁজ জানে, তারা তাকে গ্রেফতার করে লুকিয়ে রেখেছে। পুলিশ মুসাকে নিয়ে লুকোচুরি খেলছে।’

গত বছরের ৫ জুন মিতু হত্যার পর থেকে পুলিশ মুসাকে খুঁজছে শুরু করে। কিন্তু এক বছরেও তার সন্ধান পায়নি। পান্না বলেন, ‘মুসার পাসপোর্ট আমার কাছে। তাই তার দেশে বাহিরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর গত বছরের ২২ জুন সকাল ৭টার দিকে সাদা পোশাকের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ওই দিন পুলিশ প্রথমে আমার ভাসুরকে গ্রেফতার করে। পরে আমাকে ও আমার দুই সন্তানকে জিম্মি করে মুসাকে ডেকে আনে। সে বাসার নিচ তলায় আসার পরপরই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।’ পুলিশ সাইফুল আলম সিকদার সাকু এবং মুসাকে একই দিন নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘ইমিগ্রেশন পুলিশের পরিদর্শক নেজাম উদ্দিন মুসাকে গ্রেফতারকারী পুলিশের টিমে ছিলেন। গ্রেফতারের পর উনি কাউকে কল করে বলেন ‘স্যার মুসা গ্রেফতার।’ নেজাম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মুসা সম্পর্কিত সব তথ্য পাওয়া যাবে।’

নিজাম উদ্দিন মিতু হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। মিতু হত্যা মামলার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য এ কমিটি গঠন করে সিএমপি।

পান্না আক্তার, সাকু ও মুসাকে একই স্থান থেকে গ্রেফতার করার দাবি জানালেও পুলিশ জানিয়েছে, সাইফুল আলম সিকদার সাকুকে ১ জুলাই রাঙ্গুনিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে তারা।

মিতু হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি মুসা। অষ্টম শ্রেণি পাস মুসা দীর্ঘদিন সৌদিতে থাকার পর ২০০০ সালের প্রথম দিকে দেশে ফিরে আসে। এরপর বিয়ে করেন চাচাতো বোন পান্না আক্তারকে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুসা বিএনপির ক্যাডারদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। তবে তার স্ত্রীর দাবি মুসা ক্যাডার ছিলেন না।

পান্না বলেন, ‘মুসা বড় কোনও নেতাও না, ক্যাডারও না। তাকে আদালতে হাজির করা হোক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে আদালতে তার শাস্তি হবে। এতে আমাদের কোনও আপসোস থাকবে না।’

২০০৩ সাল থেকে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করেন মুসা। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তৎকালীন হাটহাজারী সার্কেলের এএসপি জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর মুসাকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতেন। সেই থেকে এই সার্কেলে যত কর্মকর্তাই এসেছেন সবার সঙ্গে সোর্স হিসেবে কাজ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাবুল আক্তার হাটহাজারী সার্কেলে যোগদানের পর তার সঙ্গে কাজ শুরু করে মুসা।