দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকের
তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম :
অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় নগরজীবনে ঘটেছে ছন্দপতন। অন্যদিকে ডায়রিয়া আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। ভিড় বাড়ছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে। বিশেষ করে গরমে ডায়রিয়া, ভাইরাস জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা এখন দ্বিগুণ। চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের অর্ন্তবিভাগও রোগীর ভিড়ে ঠাসা। একই চিত্র চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। পাশাপাশি প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতেও একই অবস্থা। ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে কোনও শয্যা খালি নেই।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০জন জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানা যায়। পুরুষদের সাধারণ ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে রোগীরা রয়েছেন। ওয়ার্ডের মেঝেতে চাদর-গদি বিছিয়ে শোয়ানো হয়েছে রোগীদের। বিভিন্ন হাসপাতালের পাশাপাশি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে এ ধরনের রোগী বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহ ধরে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান প্রণব কুমার চৌধুরী জানান,গরমের কারণে শিশুদের শ্বাসকষ্ট কিংবা নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ভাইরাস জ্বরও হচ্ছে। এ ছাড়া ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ ধরনের রোগী আমরা বেশি পাচ্ছি চেম্বারে। হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের রোগী স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আসছে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম মা-শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আবু সৈয়দ চৌধুরী জানান, রোগীদের মধ্য শিশুর সংখ্যা বেশি। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০ রোগী দেখা হয়। সেখানেও প্রায় অর্ধেক ডায়রিয়া আর বাকিরা গরমজনিত শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া ডায়রিয়া রোগী থাকে গড়ে ৯০ জনের মতো।
বমির কারণে শিশুপুত্রকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন শারমিন জাহান। চকরিয়া সদর উপজেলার এই বাসিন্দা জানান, হঠাৎ তাঁর ছেলের বমি শুরু হয়। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন তারা। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বাশঁখালীর পুইছড়ি এলাকা থেকে এসেছেন রেখা বেগম। তিনি জানান, তার দেড় বছরের সন্তানের জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়া। তাই দেরি না করে হাসাপাতালে নিয়ে আসেন।
চিকিৎসকেরা বলেন, গরমে বাইরের পচা-বাসি খাবার ও দূষিত পানির কারণে শিশুরা ডায়রিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছে। একই কারণে শ্বাসকষ্টজনিত নিউমোনিয়া রোগী বেড়েছে। এ ছাড়া গরমের কারণে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে শিশুদের। এসব ক্ষেত্রে দেরি না করে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতালের পাশাপাশি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও এ ধরনের রোগী বেড়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। চিকিৎসকেরা শিশুদের পচাঁ-বাসি খাবার ও দূষিত পানি পান করানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আর শিশুরা ঘামলে তা মুছে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।