বিডি-প্রতিদিন :
সম্প্রচার আইনের ১৯ ধারা লঙ্ঘন করলে অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। একইভাবে কোনো ব্যক্তি ধারা-১৯ এ বর্ণিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত অপরাধ ব্যতীত সম্প্রচার আইনের বিধানাবলি বা প্রবিধানমালা বা জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা বা কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশনা লঙ্ঘন তরলে অনধিক তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। জাতীয় সম্প্রচার আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় এ বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, দেশের নিরাপত্তা বা অখণ্ডতার প্রতি সম্ভাব্য হুমকি, সমগ্র দেশে বা দেশের অংশ বিশেষে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নাশকতা ও সহিংসতা উৎসাহিত করে অথবা জনশৃঙ্খলা বিনষ্টের আশঙ্কা সৃষ্টি করে, অশ্লীল ও অশিষ্ট এবং মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক কোনো সংবাদ প্রকাশ করলে সম্প্রচার কমিশন আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদানপূর্বক নিজ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে। এসব বিষয় ছাড়াও তথ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত সম্প্রচার আইনের ১৩ পৃষ্ঠার খসড়ায় সম্প্রচার কমিশন গঠন, কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা, কমিশনের কার্যক্রম ও ক্ষমতা, কমিশনের নিয়োগ ও অপসারণ, কমিশনের আর্থিক বিষয়, বেসরকারি টেলিভিশন, রেডিও-এর লাইসেন্স ও নিবন্ধন প্রদান, সম্প্রচার যন্ত্রপাতির লাইসেন্স, লাইসেন্স ও নিবন্ধনের শর্ত, লাইসেন্স ও নিবন্ধনপত্র হস্তান্তরে বাধানিষেধ, যোগ্যতার মানদণ্ড, লাইসেন্স ও নিবন্ধন বাতিল, স্থগিতকরণ ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোক্তার নালিশ গ্রহণ ও নালিশ নিষ্পত্তি এবং কমিশন কর্তৃক স্ব-উদ্যোগে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রচার আইন-২০১৭ এর খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই আইনের আওতায় থাকবে টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন ও রেডিও কার্যক্রম, স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও রেডিও সম্প্রচার কার্যক্রম, ক্যাবল টেলিভিশন চ্যানেল কার্যক্রম, এফএম বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম, কমিউনিটি বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য সম্প্রচার কার্যক্রম। আর সম্প্রচার নেটওয়ার্কের আওতায় যোগাযোগ সম্প্রচার, হাব, ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র; ডিরেক্ট হোম সম্প্রচার নেটওয়ার্ক; মাল্টি সিস্টেম ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক; স্থানীয় ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক; স্যাটেলাইট বেতার সম্প্রচার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট ও এরূপ অন্যান্য নেটওয়ার্ক কার্যক্রম যেগুলো সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা হবে। সম্প্রচার আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, এই আইনের আওতায় একটি কমিশন গঠন করা হবে। এই কমিশন হবে সাত সদস্যের। এর মধ্যে একজন নারী সদস্য। কমিশনাররা সরকার কর্তৃক গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি কর্তৃক মনোনীত এবং রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। কমিশনের প্রধান হবে চেয়ারম্যান। সম্প্রচার কমিশনের সদস্যদের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ হবে নিয়োগের তারিখ থেকে পাঁচ বছর। তবে কারও মেয়াদের আগে বয়স ৭০ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল থাকবেন। প্রস্তাবিত আইনের উপধারা-২ এ চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অপসারণের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অপসারিত করতে পারবেন যদি তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হন, বৈধ কারণ ব্যতীত তিন মাসের অধিককার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন, ৭(২) ধারা অনুযায়ী কমিশনার হিসেবে অযোগ্য হন, কমিশন ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর কোনো কাজে লিপ্ত হন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেন যাহা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে ক্ষতিকর হন এবং দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, গুরুতর অসদাচরণ বা দায়িত্ব পালনে গুরুতর অবহেলা করেন। ’ এ ছাড়া উপধারা-১ এ উল্লিখিত কারণে যদি চেয়ারম্যান বা কমিশনার তার পদে থাকার অযোগ্য হন তাহলে রাষ্ট্রপতি বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করবেন। কমিটির আনীত অভিযোগের বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করে তাকে অপসারণ করা যাবে কি না সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রস্তাবিত আইনে কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলির বিষয়ে বলা হয়েছে, কমিশন ২১টি বিষয়ে কাজ করতে পারবে। যার অন্যতম হচ্ছে নতুন লাইসেন্স বা নিবন্ধন প্রদানের জন্য সুপারিশ করা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।