অনলাইন ডেস্ক :
মাতাল হয়ে প্রাইভেটকারের ভেতরে বান্ধবীকে নিয়ে ফুর্তি করছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও তার এক বন্ধু। আর ফুর্তি করতে গিয়েই রাজধানী কারওয়ান বাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটাল ছাত্র। এতে এক নিরাপত্তা প্রহরী ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং তিনজন আহত হন। আহতদের মধ্যে এক কলেজছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার রাতে দুর্ঘটনার পর ধরা পড়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল হাসান। তাকে রেখে তার বান্ধবী ও বন্ধু পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মাতাল নাজমুল হাসানকে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িসহ আটক করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, নাজমুল হাসানের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অপরাধে পুলিশ বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির মালিক নাজমুল হাসানের বাবা বাদশা মিয়া। নাজমুল হাসান রাজধানীর ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির বিবিএর ছাত্র। বাসা রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে, বাসা নং ১৩। বাবা ইতালি প্রবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী, নিরাপত্তা প্রহরী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ দ্রুত গতিসম্পন্ন একটি প্রাইভেটকার কারওয়ান বাজার হোটেল সুপার স্টারের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাথের ওপর উঠে যায়। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির নিরাপত্তা প্রহরী ইসমাইল হোসেন গাড়িচাপায় মারা যায়।
আহত হয় আরো তিনজন। তাদের মধ্যে কলেজছাত্র ফাহিমুর রহমান বাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকি দু’জনের মধ্যে একজনের পা ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির আরেক নিরাপত্তা প্রহরী মোতালেব হোসেন বলেন, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ দ্রুতগতির একটি গাড়ি এসে চারজনকে চাপা দেয়।
এ সময় আমি ছুটে গেলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ি ঘোরানোর সময় ফুটপাথের দোকানে ধাক্কা খেয়ে আছড়ে পড়ে। তখন এক মেয়ে এবং এক ছেলে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
তবে গাড়ির চালকের সিটে বসা একজনকে ধরে ফেলি। এ সময় আমরা তাকে আবল-তাবল করতে দেখি। ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির মালিক সুজন সাহা বলেন, তখন নাজমুল হাসানকে মাদকাসক্ত মনে হয়েছে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
নিহত নিরাপত্তা প্রহরী ইসমাইল হোসেনের ছেলে এরশাদুল হক বলেন, তারা দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চায়। কিন্তু আমরা তাতে সম্মত হইনি।
ফাহিমের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, একমাত্র ছেলের দুর্ঘটনার খবর শোনার পর তার মা পাগলপ্রায়। এখন পর্যন্ত ছেলের জ্ঞান ফেরেনি। এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কীভাবে কী করব ভেবে পাচ্ছি না। এমন পরিস্থিতিতে নাজমুলের পরিবারের কাছে ছেলের চিকিৎসার খরচ দাবি করেছেন তিনি। ফাহিম গুরুতর আহত হয়েছেন। সে বাঁচবে কিনা ডাক্তাররা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না।
তেজগাঁও থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ কবির হোসেন জানান, ওইদিনের ঘটনা শোনামাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে গাড়িসহ নাজমুল নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারার অপরাধে মামলা করা হয়েছে।-নতুনসময়
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।
