অন্যদিকে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এডিসি ওয়াহিদুল ইসলামও ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ফরহাদ মজহার যশোর থেকে বাসে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। সাড়ে ১১টার দিকে যশোর প্রধান সড়কে বাস থেকে অভয়নগর থানা ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে।
অন্যদিকে পুলিশ সদর দফতরও একই দাবি তুলেছে। পুলিশ সদর দফতর বলছে, পুলিশ সদর দফতরে বিশেষ টিমের সহযোগিতায় ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করেছে যশোরের অভয়নগর থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, পুলিশ ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করলে আমরা ক্রেটিড নিতাম না। এসএমএস’ও করতাম না। র্যাব-৬ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করেছে। সোমবার রাতে যশোরের নওয়াপাড়ায় বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়। ফরহাদ মজহারকে র্যাব-৬ কার্যালয়ে নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
যশোর অভয়নগর থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, ফরহাদ মজহার ঢাকা ফিরছিলেন। নওয়াপাড়ায় পুলিশ চেকপোস্ট চলছিল। সে সময় ফরহাদ মজহারের লোকেশন সেখানেই দেখাচ্ছিল। চেকপোস্টে মাত্র চারজন পুলিশ ছিলেন। তার মোবাইলের লোকেশন নিশ্চিত হয়ে যশোর প্রধান সড়ক থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে পেছনের সিট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
অভয়নগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের পর র্যাবের ৩টা গাড়িও সেখানে উপস্থিত হয়। পুলিশ সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে ফরহাদ মজহার সাহেবকে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, র্যাব নয় পুলিশ ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করেছে। পুলিশ সদর দফতরে বিশেষ টিমের সহযোগিতায় ফরহাদ মাজহারকে উদ্ধার করেছে যশোরের অভয়নগর থানা পুলিশ।
র্যাবও একই দাবি করায় প্রশ্ন উঠছে ফরহাদ মজহার ঠিক এখন কোন বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফোন করে সর্বশেষ আপডেট জানানোর কথা বলে ফোন রাখেন তিনি। এরপর তিনি ফোন করে বলেন, পুলিশই ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করেছে। পরে র্যাব এসে ফরহাদ মজহারকে হেফাজতে নিয়ে চলে যায়। এরপর আর কোনো মন্তব্য তিনি করতে রাজি হননি।
উদ্ধারের ব্যাপারে জানতে চাইলে ফরহাদ মজহারের পারিবারিক বন্ধু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়ক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সোমবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে জানান, এইমাত্র তার স্ত্রী ফরিদা আখতার উদ্ধার হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, উদ্ধারের পর ফরহাদ মজহারের সাথে তার কথাও হয়েছে।
ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে সোমবার দুপুরে রাজধানীর আদাবর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ফরিদা আখতার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভোর ৫টার পর থেকে তার (ফরহাদ মজহার) কোনো খোঁজ মিলছে না। সকাল বেলা কে বা কারা ফোন করে। নিচে নামামাত্র তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার স্ত্রীর কাছে ফোন আসে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে। এরপরই তিনি পুলিশকে অভিযোগ করেন। দিনভর র্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে চলে ফরহাদ মজহারের অবস্থান শনাক্ত ও উদ্ধারের নিরবিচ্ছন্ন চেষ্টা।
স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেন বলেন, ফরহাদ মজহার উদ্ধার হওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছি। উদ্ধারে ভূমিকা রাখায় র্যাব ও পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ। খুব দ্রুতই ফরহাদ মজহারকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।