মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের অধীন খাল খনন কর্মসূচীতে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে। এমনকি খাল খননে কাবিটা প্রকল্পের জন্য প্রণীত ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাও মানা হচ্ছেনা। প্রান্তিক শ্রমজীবির পরিবর্তে খাল খননের মাটি কাটা হচ্ছে স্ক্রেভেটার মেশিনের সাহায্যে। অথচ মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালায় উল্লেখ রয়েয়ে, কাবিটা প্রকল্পের অধীন প্রকল্পগুলো শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটতে হবে এবং শ্রমিকদের দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে পারিশ্রমিক প্রদান করার নিয়ম থাকলেও পেকুয়ায় তা মানা হচ্ছেনা। অভিযোগ রয়েছে, পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এর সাথে আঁতাত করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কমিটির লোকজন খাল খনন কর্মসূচীতে শ্রমিকের পরিবর্তে স্ক্রেভেটারের সাহায্যে মাটি কাটা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় প্রান্তিক শ্রমজীবিরা বেকার হয়ে পড়েছে।
পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকার্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ২য় পর্যায়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিওর মাধ্যমে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী ছড়া খাল খনন প্রকল্পে ৪লাখ ৪৯ হাজার ২২৩ হাজার টাকা ও একই ইউনিয়নের টইটং নুনা ছড়া খাল খনন প্রকল্পে ৪ লাখ টাকাসহ দুইটি প্রকল্পে খাল খননের জন্য ৮লাখ ৪৯ হাজার ২২৩টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, গত ১৫ দিন পূর্বে ওই খাল দুইটির খননের কাজ শুরু করেছে টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী। তি্িন ওই দুইটি প্রকল্পের সার্বিক কাজের তদারকী করছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদ কাবিটা প্রকল্পের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রকল্প এলাকার শ্রমিকের পরিবর্তে স্ক্রেভেটার মেশিন দিয়ে খাল খননের কাজ করছেন। সরেজমিনে এর সত্যতা ও পাওয়া গেছে। দুইটি খাল খননের কাজ স্ক্রেভেটার মেশিন দিয়ে করা হচ্ছে। কিন্তু পেকুয়ার পিআইও সৌভ্রাত দাশ ও উপজেলা প্রশাসন এ নিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা লংঘন করে শ্রমিকের পরিবর্তে স্ক্রেভেটার দিয়ে খাল খননের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শ্রমিকের পরিবর্তে স্ক্রেভেটার দিয়ে কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, দ্রুত খাল খননের কাজ সম্পন্ন করতেই তা করা হচ্ছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা প্রকল্পের বাস্তবায়ন নির্দেশকা মতে খাল খননের কাজ শ্রমিক দিয়ে না করায় স্থানীয় প্রান্তিক শ্রমজীবি লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। গ্রামীণ অবকাটামো রক্ষণা বেক্ষণ কর্মসূচীতে সরকারী নির্দেশকা লংঘন হলেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের মাথা ব্যথা নেই।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, টইটং ইউপি চেয়ারম্যান ও পিআইও সৌভ্রাত দাশের যোগসাজসে শ্রমিকদের কাবিটা প্রকল্পে কাজ বাস্তবায়ন না করে স্ক্রেভেটার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বরাদ্দের সিংহভাগই ভাগভাটোয়ার করে নিকে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সৌভ্রাত দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টইটংয়ের খাল খনন প্রকল্পের কাজ কিভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে তা ইউএনও স্যার খুব ভালই জানেন। তিনি এ ব্যাপারে ইউএনওর সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।
পরে পেকুয়ার ইউএনও মো: মাহবুবুল করিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।