: দুর্ভোগে ১০হাজার পাহাড়ী-বাঙ্গালী

শফিক আজাদ,উখিয়া :

গত বর্ষনে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক লন্ডভন্ড হওয়ার পাশাপাশি সীমান্তের পার্বত্য ঘুমধুম ইউনিয়নের বৃহত্তর রেজু মৌজা এলাকার ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সাথে উখিয়ার যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে প্রায় ১১দিন। বিশেষ করে রেজুপাড়া বিওপি’ ক্যাম্পের পশ্চিম পাশের্^র ঢালায় সড়কের উপর পাহাড়ী ধ্বসে মাটির স্তুপ হয়ে থাকায় ওই এলাকার বসবাসকারী ১০হাজারের অধিক পাহাড়ী-বাঙ্গালীর চলাচল মারাত্মক বাধাগ্রস্থ হয়ে দাড়িয়েছে, এবং তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে না পেরে ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এছাড়াও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীরা পড়ালেখায় ব্যাঘাত হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

সরজমিন রেজুপাড়া বিওপি ক্যাম্প সংলগ্ন ঢালা ঘুরে রেজু ফাত্রাঝিরি এলাকা বসবাসকারীদের সাথে কথা জানা গেছে, স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে তাঁদের একটি দাবী ছিল এ সড়কটি চালু করার। এলাকাবাসির প্রচেষ্টায় অনেক কষ্টের বিনিময়ে দীর্ঘ ১ যুগ পূর্বে তৎকালীন সরকারের আমলে সড়কটি কাজ শুরু হয়। প্রতিমধ্যে উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি দু’উপজেলার সীমান্ত টানাটানি নিয়ে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময়কার পাশ^বর্তী উখিয়ার উপজেলার রতœাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দীপক বড়–য়ার যৌথ প্রচেষ্টায় সড়কটি নির্মাণ কাজ পূনরায় শুরু হয়ে সফল ভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু পক্ষান্তরে গত ৩ বছর পুর্বে পাহাড় ধ্বসে এই সড়ক যোগাযোগটি বন্ধ হয়ে গেলে রতœাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী নিজ উদ্যোগে রাস্তাটি সংস্কার করে যোগাযোগ স্বচল করেন। সম্প্রতি প্রাকৃতিক বন্যা ও পাহাড় ধ্বসে সড়কে বিশাল মাটি স্তুপ হয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেলেও দীর্ঘ সময় ধরে সরকারি,বেসরকারি সাহায্য বা কোন জনপ্রতিনিধি, বিত্তশালী এগিয়ে আসেনি। রেজু ফাত্রাঝিরি এলাকার মংকিছা চাকমা হতাশ কণ্ঠে বলেন, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় তাঁর অর্নাস পড়–য়া ছেলে ১১দিন যাবৎ কলেজে যাওয়া আসা করতে পাচ্ছেনা। একই অভিযোগ আরো অনেকের।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, পাহাড়ী মাটি এসে সড়কটি ইতিপূর্বে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল একাধিক বার। তখনকার চেয়ারম্যান,মেম্বার এবং স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা চালু করা হলেও এবার বড় ধরনের পাহাড় ধ্বসের কারনে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে স্থানীয় লোকজন ও সীমান্তে নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি’ সদস্যদের।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবুল কান্তি চাকমা বলেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেক কষ্ট করে আমরা স্থানীয় লোকজন বর্তমানে যাতায়াত করছি। কিভাবে যাতায়াত করছি, রাস্তাটি যোগাযোগ স্বচল হয়েছে কি না? দীর্ঘ ১১দিন হয়ে গেলেও কেউ খবর নেয়নি। এখানকার কৃষিপণ্য বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহকারী পরিবার গুলো চরম কষ্টে মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারনে অনেকের কাঁচা তরি-তরকারি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি যে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করে দেওয়ার জন্য।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একে জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, পাহাড় ধ্বসের কারনে সড়কে প্রচুর পরিমাণ পাহাড়ী মাটি চলে আসায় অল্প টাকায় কাজ হচ্ছে না। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার মাটি সরিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, বৃহত্তর রেজুবাসির কষ্ট লাঘবের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি যোগাযোগ স্বচল করার হবে।