(পর্ব -১)

আলাউদ্দিন :

ভাবছিলাম অনেক দিন ধরে লেখব কিন্তু মা’র অপারেশনের পর থেকে কিছু পারিবারিক টেনশন থাকায় লেখা হয়নি । রমজানে শুরুর এক সপ্তাহের মাঝামাঝি মা অসাবধানতা বশত বাড়িতে পড়ে পায়ের হাঁড় ভেঙ্গে ফেলে ।

মাকে স্থানীয় লোহাগাড়া জেনারেল হাসপাতালে ডা: তারেক আহমদ কাছে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিত্‍সা দিয়ে পরদিন মা কে নিয়ে চলে গেলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । জীবনে প্রথম বার কোন রোগীকে নিয়ে চমেকে । ২৬ নং মহিলা ওয়ার্ডে মাকে ভর্তি দিল । সিড়ি দিয়ে উঠার সময় ২৬ নং ওয়ার্ডের নিচ তলার বারান্দায় কয়েজন পঙ্গু রোগী দেখতে পাই । তাদের পাশে কেউ নেই । একা বসে যেন তারা কিছু ভাবতেছে । জরুরী কাজে প্রায় সময় নিচে- উপরে আসা যাওয়া সময় দেখতাম তাদের । তাদের দেখে খুব চিন্তা লাগত। ভাবলাম তাদের নিয়ে একটা ফিচার লেখা যেতে পারে ।

পরদিন সকালে ফেসবুক বন্ধু আরিফুল ইসলাম চৌধুরীকে সাথে নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করলাম তাদের সাথে । কথা হল এক বৃদ্ধের সাথে ,বয়স প্রায় ৬০ এর কাছাকাছি , মুখে সাদা দাড়ি আছে ।

নামটা ঠিক মনে নাই । বাড়ি নাকি হাটাজারিতে । জানতে চাইলাম দূর্ঘটনা কিভাবে হল । বৃদ্ধটি জানান ৫/৬ মাসের বেশী আগে হাটাহাজারিতে রাস্তা পারাপারের সময় বাসের সাথে দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন । এর পর কে বা কাহারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে দিয়ে চলে যায় । দুর্ঘটনায় তার একটি পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায় । পুরো পা’টি সাদা ভেন্ডিজে ঢাকা ।  জানতে চাইলাম পরিবারের কেউ আছে কিনা । বৃদ্ধটি জানান, তার কেউ নেই । তিনি  একা।

গায়ে পরনে একটা লুঙ্গী ছাড়া আর কিছু নেই । যে বেডে শুয়ে আছে তাও তালিজোড়া । হাসপাতাল কতৃর্ক যা দেয় তা খেয়ে কোন রকম বেচেঁ আছে । তখন তীব্র গরম পড়েছিল । গরম সহ্য করতে না পেরে ছটফট করতেছে সে । এসব চিত্র দেখে বন্ধু আরিফুল ইসলাম বলে উঠল , কেউ না থাকায় আজ তাদের এই অবস্থা। আমার কলেজ বন্ধুদের বলে দেখি তাদের জন্য কিছু করতে পারি কিনা। এছাড়াও ২৬নং ওয়ার্ডে রোগী বেশী থাকে তাছাড়া অভিভাবক না থাকায় তাদের স্থান বারান্দায় হয়েছে ।

 

চলবে……..

আলাউদ্দিন ,লোহাগাড়া