ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশে বছরে কতজন বিদেশি পর্যটক আসেন, কতজন দেশি পর্যটক ঘুরতে যান? তার কোনও সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ফলে অনুমানের ভিত্তিতেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা হয়। তাই পর্যটনের উন্নয়নে গৃহীত সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় অনুমান নির্ভর তথ্যের ওপর।
অবশ্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের (বিটিবি) দাবি, পর্যটকদের সঠিক পরিসংখ্যান নির্ণয়ে ২০১২ সালে একবার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইমিগ্রেশন পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহায়তা না পাওয়ায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সঠিক পরিসংখ্যান নির্ণয়ে ট্যুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট (টিএসএ) গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার জন্য ডাটাবেজের কাজ শুরু করা যায়নি। ডাটাবেজ শুধু মাত্র ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব না। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়েই সঠিক পরিসংখ্যান তৈরি সম্ভব। আমরা এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করছি। একটি কমিটিও করা হয়েছে। আশা করছি এ বছরের মধ্যে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’
ট্যুরিজম বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পর্যটন খাতের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিসংখ্যান। ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণার পরও আবারও পর্যটকদের পরিসংখ্যান নির্ণয়ে ট্যুরিজম স্যাটালাইট একাউন্ট (টিএসএ) চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। যা বাস্তবায়ন করা গেলে কতজন বিদেশি পর্যটক দেশে আসেন? তারা কী পরিমাণ অর্থ খরচ করেন? কোথায় বেড়াতে যান? হোটেল, পরিবহন ও অন্যান্য খাতে কী পরিমাণ আয় হয়? তা সহজেই জানা যাবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের তথ্যও জানা যাবে।
আরও জানা যায়, টিএসএ চালু করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ট্যুরিজম বোর্ডের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এসব সংস্থার দেওয়া তথ্য নির্দিষ্ট সার্ভারে জমা করে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, ‘পর্যটন নিয়ে গবেষণা ও সঠিক পরিকল্পনার জন্য দরকার সঠিক তথ্য। পর্যটকদের সঠিক পরিসংখ্যান ছাড়া অনুমান নির্ভর তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলে তার সুফল নাও আসতে পারে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সঠিক তথ্য ছাড়া এ খাতের বিনিয়োগও লাভজনক হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পর্যটন খাত বর্ধনশীল এবং লাভজনক হলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। সঠিক তথ্য না থাকায় সব সিদ্ধান্ত কার্যকরি ভূমিকার রাখতে পারছে না। অনুমানের ভিত্তিতে কোনও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব না। তাই দ্রুত সঠিক পরিসংখ্যানের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’
এ প্রসঙ্গে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক ও প্যাসেফিক এশিয়া ট্রাভেল লিমিটেড (পিএটিএ) বাংলাদেশ চ্যাপটারের মহাসচিব তৌফিক রহমান জানান, ‘আমরা জানি না বছরে কোন দেশ থেকে কতজন পর্যটক আসেন? ফলে কোন দেশে আমাদের প্রচারণা বেশি দরকার? তা জানা যাচ্ছে না।