সিবিএন:

মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় আহত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করার বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার সত্যেম সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

রোগীর কাছে ফি আদায়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর সদর হাসপাতারের সুপার ডাঃ পু চ নু সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এই সুপারিশ করেন।

গত ২৪ ঘন্টা তদন্ত শেশে রবিবার সকালে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির ২ সদস্য অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ-সার্জন ডাঃ মো আইয়ুব আলী ও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মোহাম্মদ শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী।

সংঘটিত ঘটনায় তদন্ত কমিটির কাছে ভুক্তভোগী রোগী রাসেলের ২ স্বজন, ওই সময় দায়িত্বরত একাধিক কর্মচারীর বক্তব্য নেন।

ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক সত্যেম সরকারের লিখিত বক্তব্য নেয় তদন্ত কমিটি।

এছাড়াও ওই দিনের ভিডিও ফুটেজ নিয়ে তদন্ত কমিটি রোগীর স্বজন, হাসপাতালের কর্মচারী ও ডাক্তার সত্যেশ জেরা করেন। তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে রোগীর কাছে ডাক্তার সত্যেশ সরকারের ৫০০০টাকা দাবির সত্যতা পান বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্য হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মোহাম্মদ শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান, ঢ়টনায় সংশ্লিষ্টদের বিস্তারিত বক্তব্য নেয়া হয়েছে। জেরা করা হয়েছে অভিযুক্ত চিকিৎসককে। নিরপেক্ষ তদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে উর্ধ্বনমহল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

হাসপাতারের সুপার ডাঃ পু চ নু জানান, রবিবার সকালের তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়। প্রতিবেদনের আলোকে বিভাগিয় ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

২০ জুলাই রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রাসেল নামের এক রোগীর সঙ্গে অশালীন আচরণ ও ৫ হাজার টাকা দাবী করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সত্যেম সরকার। ওই্ দিনই এ ঘটনা নিয়ে সিবিএন-এ সংবাদ  প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে সবখানে তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে সিবিএন-এ ধারাবাহিক তিনটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অভিযুক্ত ডাক্তার এর বিরুদ্ধে নানা কথা ওঠে আসে।

বিভিন্ন সুত্রে প্রাপ্ত অভিযোগ থেকে জানা যায়,  কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার সত্যেম সরকার ডিউটি রোটেশন তথা নিয়ম নীতি মানেননা। ইচ্ছে মতো হাসপাতালে আসেন। ইচ্ছে মতো হাসপাতাল ত্যাগ করেন। অধিকাংশ সময় হাসপাতালে আসলেও মুখ ভার করে বসে থাকেন। তিনি জরুরী বিভাগের ডাক্তার হলেও নিজ দায়িত্ব জ্ঞান নেই। রোগীদের সাথে অশালীন ব্যবহার তার হরহামেশা চরিত্র। এসব অভিযোগ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরতদের।

হাসপাতাল সুত্রে পাওয়া তথ্য মতে, প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টা থেকে পরের দিন শুক্রবার বেলা ২টা, একই দিন রাত ১০ টা থেকে পরের দিন শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগে তার ডিউটি। পাশাপাশি পোস্টমর্টেমের দায়িত্বও এ সময়য়ের মধ্যে রয়েছে।

তিনি ঢাকা থেকে আসেন বিধায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে এ সুবিধা দিয়েছেন। এরপরও তিনি নিজ দায়িত্ব পালনে অন্তরিক নন। কর্ম সময় শেষ না হতেই স্টেশন ত্যাগ করেন। এ কারণে কর্তৃপক্ষও ডাক্তার সত্যেম সরকারের উপর সন্তুষ্ট নন। তিনি মূলতঃ সার্জারী বিভাগের সহকারী সার্জারী।

সংশ্লিষ্ট সুত্র মারফত জানা গেছে, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে অনেকবার ওয়ার্নিং দেয়া হয়েছে। এরপরও তিনি গুরুত্ব দেননা। চলেন ইচ্ছে মতো। হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি রোটেশনের প্রতি তার গুরুত্বই নেই বললে চলে। অনেকের প্রশ্ন,  সত্যেম সরকারের খুঁটির জোর কোথায়?

নাম না ছাপানোর অনুরোধে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, ডাক্তার সত্যেম সরকার  গত ২৫ জানুয়ারী যোগদান করেন। অল্প সময় চাকুরীকালে তিনি অধিকাংশ সহকর্মীদের কাছে অপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হন। অপরাধ শুধু আচরণ।