নুরুল কবির, বান্দরবান:
পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় বান্দরবান সরকারী মহিলা কলেজে এবার ফল বিপর্যয় ঘটেছে।
২০১৭ সালের এইচ এস সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪৫০ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১৬৬ জন। শতকরা পাশের হার ৩৬ দশমিক ৮৯।
সেখানে বিজ্ঞান বিভাগে ৬০ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩৯ জন, মানবিক বিভাগে ২৬৩ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৭৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৩০ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৫২ জন। সবচেয়ে বেশী খারাপ করেছে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বান্দরবান জেলার পাচঁটি কলেজের মধ্যে পাসের হারে প্রথম বান্দরবান ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, এ কলেজ থেকে ১২৯ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১১৯ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮ জন। দ্বিতীয় নাইক্ষংছড়ি সরকারি হাজী এম এ কালাম ডিগ্রী কলেজ থেকে ১৩৮ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১২০ জন। এদিকে পাসের হার গত বছরের তুলনায় এ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে বান্দরবান সরকারী কলেজে। এ কলেজ থেকে ৬৫০ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩৫০ জন। একই চিত্র লামা মাতামুহুরী সরকারি ডিগ্রি কলেজেরও। এ কলেজ থেকে ৪০২ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২১৩ জন। সবচেয়ে বেশি খারাপ ফলাফল করেছে বান্দবারবান সরকারী মহিলা কলেজ। জেলা শহরের বালাঘাটায় অবস্থিত হোস্টেল সুবিধা সম্বলিত মেয়েদের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বান্দরবান সরকারী মহিলা কলেজ। হোস্টেল সুবিধা থাকায় বান্দরবান ও আশপাশের মেয়েরা এ কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে এ কলেজে ৩’টি বিভাগে ১৩ জন শিক্ষক, প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে বাংলা ও মানবিক বিষয়ে শিক্ষক সঙ্কট থাকায় পাসের হার খারাপ হয়েছে বলেন অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন আমার কলেজে অনেক দিন ধরেই বাংলা ও মানবিক বিভাগে শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে অনেকবার বলার পরে কিছুদিন আগে বাংলা বিষয়ে একজন শিক্ষক দেয়া হয়েছে। শিক্ষক না থাকায় মেয়েরা এসব বিষয়ে খারাপ করেছে বলেও মনে করেন তিনি। তবে টেবুলেশন শীট না আসার আগে সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না -কোন বিষয়ে বেশী খারাপ করেছে। তিনি মতপ্রকাশ করেন- এ ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়ে হওয়ায় শিক্ষার দিক থেকে এমনিতেই একটু পিছিয়ে রয়েছে এ কলেজের মেয়েরা।
এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক ফরিদ উদ্দীন মুঠো ফোনে বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ পাসের হার সম্পর্কিত বিষয় বলতে পারবেন। মহিলা কলেজ থেকে সদ্যপাস করা শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার বৃষ্টি ও সাদিয়া আফরিন জানায়, কলেজে শিক্ষক কম এবং যে কয়জন আছেন তারাও নিয়মিত ক্লাস নেন না। তাই আমাদের কলেজে পাসের হার কম। তবে পাসের হার কম হওয়ায় ভিন্ন মতপ্রকা করেন অভিভাবকরা কেউ কেউ এর জন্য শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনিকে দায়ী করেন। আবার কেউ কেউ খাতা কাটায় কড়াকড়িকে দায়ী করেছেন। শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাংবাদিক আল ফয়সাল বিকাশ বলেন, এ বছর প্রতিটা বোর্ডেই পাশের হার কম, বিগত বছর গুলোর তুলনায় এবার একটু বেশী কড়াকড়ি করে খাতা কাটা হয়েছে তাই পাশের হারও কম। তবে সরকারি মহিলা কলেজের পাশের হার খুবই কম এটা মেনে নেয়া যায় না,শিক্ষকদের গাফিলতি রয়েছে। কোন কোন শিক্ষক কলেজে পড়ানোর চাইতে নিজেদের টিউশনিকে বেশী গুরুত্ব দেয় তাই যারা প্রাইভেট পড়ে তারা ভাল করে আর যারা পড়ে না তারা ফলাফল খারাপ করে। ১৩জন অভিজ্ঞ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ দু’বছর লেখাপড়ার এমন ফল মেনে নিতে পারছেন না অভিভাবক ও শিক্ষা সংশিষ্টরা।