শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বহুল বিতর্কিত কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলামকে অবশেষে বদলি করা  হয়েছে। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে তাকে শাস্তিমুলক বদলি করা হয়েছে খুলনায়। ৩ আগষ্ট তার বদলির আদেশ জারি করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক কার্যালয়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মহা পরিচালক কার্যালয়ের তথ্য মতে, সরদার শরীফুল ইসলামকে কক্সবাজার থেকে বদলি করে খুলনার বিভাগীয় কার্যালয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী ২০ আগষ্টের মধ্যে তাকে সেখানে যোগ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে কক্সবাজারের নতুন সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন মহা পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশরাফ। তিনি খুব শিগগিরই কক্সবাজারে যোগদান করবেন।

সূত্র মতে, সরকার শরীফুল কক্সবাজারের প্রায় পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। মোটা অংকের বিনিময়ে পাহাড়কর্তনকারীদের সাথে আতাঁত, পাহাড়ি জায়গা দখল ও স্থাপনা নির্মাণ, ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, অভিযানে জব্দকৃত মালামাল আত্মসাৎ, সরকারি গাড়ি আত্মীয়-স্বজনের কাজে ব্যবহার, হোটেল-মোটেল জোন থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় ইটভাটা থেকে অনৈতিক টাকা আদায়সহ আরো বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে সরদার শরীফের বিরুদ্ধে। ইট ভাটাগুলো থেকে এককালিন ও মাসিক চাঁদা আদায় করা হয়। পাহাড় কেটে গড়ে উঠা কথিত বেশ কয়েকটি আবাসন প্রকল্প থেকে একাধিক প্লট নেন তিনি।
এসব অভিযোগে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও মহাপরিচালক কার্যায়ের একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের তদন্তও হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র মতে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে তার অনিয়ম-দুর্নীতি কক্সবাজারের প্রায় সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ছাড়িয়ে যায়। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সরেজমিন তদন্তও হয়েছে। তদন্তে শরিফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
সূত্র জানায়, শরিফের বিরুুদ্ধে ২০১৬ সালের ২ মে ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে।

সরেজমিন তদন্তকালীন সময়ে তদন্ত কর্মকর্তা পাহাড় কেটে তৈরি আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এসব আবাসন প্রকল্পে কোথায় কোথায় শরিফুল ইসলামের প্লট রয়েছে তাও তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে তদন্তের আওতায় নেন। অভিযানের নামে গাড়ি ভাড়া, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, অভিযানে জব্দকৃত মালামাল আত্মসাৎ, সরকারি গাড়ি আত্মীয়-স্বজনের কাজে ব্যবহারসহ আরও একাধিক অনিয়মও আসছে তদন্তের আওতায়। দুর্নীতিবাজ সরদার শরীফুল ইসলাম বদলি হওয়ায় কক্সবাজারের পরিবেশবাদীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এই জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দীন বলেন, সরদার শরীফুল ইসলাম রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি কক্সবাজারের পরিবেশকে আরো ধংসের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। তার কারণে কক্সবাজারে পরিবেশ বিরোধীরা লাগাহীন হয়েছে।