সালমান শাহ্ ‘আত্মহত্যা’করেছেন, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে- তদন্তের স্বার্থে ভিডিওটি আলামত হিসেবে ব্যবহারের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে আলোচিত এ মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই।
মঙ্গলবার পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, সুলতানা রুবির ভিডিওটি তদন্তের একটি অংশ হতে পারে। তবে এটি তদন্তের মোড় ঘুরানোর মতো কিছু না। তদন্ত হচ্ছে সাক্ষ্যপ্রমাণের বিষয়। ভিডিওটি অবশ্যই আমলে নেয়া হয়েছে, তবে সুলতানা রুবি নিজের স্বার্থে বা কারও কথায় ভিডিওটি তৈরি করেছেন কি না- তাও খতিয়ে দেখা হবে।
রুবি ভিডিওতে সালমানকে ‘হত্যার পেছনে’ স্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, তদন্তের অংশ হিসেবে আমরা সালমান শাহ্’র বিউটিশিয়ান সুলতানা রুবিকে খুঁজছি। তাকে খুঁজতে সিলেটেও অভিযান চালানো হয়। গতকাল সুলতানা রুবির নামে যে ভিডিওটি দেখা গিয়েছে সেটি আমাদের তালিকায় থাকা রুবি কি না, আমরা সেটি যাচাইয়ের চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আইনের চোখে ভিডিওটির বৈধ্যতা খুঁজছি। ভিডিওটি সাক্ষ্য হিসেবে নেয়া যায় কি না- বিষয়টি আমরা আদালতে উপস্থাপন করব। আদালত যে নির্দেশনা দেবে, ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেব।
‘আদালত যদি অনুমতি দেয় তাহলে ঘটনার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে ভিডিওতে দেয়া ম্যাসেজগুলো ইঞ্চি ইঞ্চি মেলানোর চেষ্টা করব। এরপর সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রুবিকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার সাক্ষ্য নেয়ার ব্যবস্থা করব।’
ভিডিওবার্তায় রুবি সালমানের হত্যাকারী যাদের কথা বলেছেন তারা নজরদারিতে আছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বনজ কুমার জাগো নিউজকে বলেন, ২০ বছর পর মামলাটি আমাদের কাছে এসেছে। মামলায় সাক্ষ্য নেয়ার জন্য যাদের খুঁজছি, তাদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। নজরদারি করছি, সেটিও বলা যাচ্ছে না।
মামলা নিয়ে বিভ্রান্তি
তদন্ত কর্মকর্তা এসএস আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, পিবিআই যে মামলাটি তদন্ত করছে সেটি একটি অপমৃত্যুর মামলা। মামলায় সালমান শাহ্ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন, না কি করেননি- বিষয়টি প্রমাণের চেষ্টা করা হবে।
ওই ঘটনায় কোনো হত্যা মামলা হয়নি। সালমান শাহ্’র মা একটি হত্যা মামলার আবেদন করেছিলেন, তবে সেটি এখনও গ্রহণ করা হয়নি। অপমৃত্যু মামলার তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিষয়টি যদি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত হয় তাহলে সেটি হত্যা মামলা হিসেবে গৃহীত হবে।
সোমবারের ভিডিওতে যা বলেছেন সুলতানা রুবি
রুবি ভিডিওবার্তায় দাবি করেছেন, সালমান শাহকে খুনে জড়িত ছিলেন তার স্বামী যিনি চীনা নাগরিক। নাম চ্যান লিং চ্যান ওরফে জন চ্যান। জন চ্যান নামে তিনি বাংলাদেশে পরিচিত। ধানমন্ডির সাংহাই রেস্টুরেন্টের মালিক তিনি।
চীনাদেরকে দিয়ে সালমানকে খুন করানো হয়। এতে জড়িত ছিলেন সালমান শাহের স্ত্রী সামিরার পরিবারও। ওই খুনের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানেন। বিষয়টি যেভাবেই হোক, আবার যেন তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি যেভাবেই পারেন আদালতে সাক্ষী দেবেন।
এদিকে, রুবির দেয়া তথ্য ‘অবান্তর’ দাবি করেন সামিরার বাবা শফিকুল হক হীরা। তিনি ভিডিও প্রকাশকারী রুবিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলেও দাবি করেন।
অন্যদিকে, দেশীয় চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ ‘হত্যা’র রহস্য উন্মোচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চেয়েছেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।