সিবিএন ডেস্ক:
সরকারি কর্মচারীদের চেয়ে সাংবাদিকদের বেতন বেশি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর এই যুক্তিতে সাংবাদিকদের জন্য নতুন ওয়েজবোর্ডের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের প্রতিনিধি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, দেশে প্রয়োজনের চেয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা বেশি। এগুলোর কয়েকটি সামনেই মরে যাবে।
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নোয়াব প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে সংবাদপত্র শিল্পের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেন অর্থমন্ত্রী। তবে এ বিষয়ে বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বৈঠক শেষে বেরিয়ে জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
এ সময় সংবাদপত্রের জন্য কোনো নতুন ওয়েজবোর্ডের প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিকজ ইওর স্যালারি স্কেলস আর মাচ বেটার দ্যান দ্য গভর্নমেন্ট স্যালারি স্কেলস। দেয়ারফর ইট ইজ আননেসেসারি (কারণ আপনাদের বেতন সরকারি বেতন স্কেলের চেয়ে বেশি। সে কারণেই এটি অপ্রয়োজনীয়) ।’
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে বলেন, যারা সরকারি চাকরি করেন তাঁরা পেনশন পান এবং তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড আছে। সাংবাদিকরা বেশির ভাগই এই সুবিধা পান না।
আরেক সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করা একজন ব্যক্তি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন। সরকারি চাকরিতেও কি মাস্টার্স পাস করে আট হাজার টাকা বেতনে চাকরিতে প্রবেশ করেন কি না?
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মাস্টার্স পাস করা আমাদের পিয়নও আছে।’
সংবাদপত্রের সংখ্যার প্রসঙ্গ টেনে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘৫০০ কাগজ আপনারা এক্সিস্ট করেন? দে ডু নট এক্সিস্ট (এগুলোর অস্তিত্ব নয়)। একটি ফলস নাম্বার (মিথ্যা সংখ্যা) এবং এটা সব চুরি করা। ঢাকায় কয়টা কাগজ আছে? দৈনিক কাগজ?’
উপস্থিত সাংবাদিকরা জবাব দেন, ২০১টি। উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাবিশ, দ্যাটস মাই আনসার টু ইউ। (রাবিশ, এটাই আপনাদের আমার উত্তর) রাবিশ, ২০১! ১৫টা হবে কি না আমার সন্দেহ আছে। ২০টা হতে পারে বড়জোর। ৫০০ কতটা কী আছে খবরের কাগজ, অল বোগাস। ওদের জন্য বেতন স্কেল ঠিক করব? নো, দ্যাট উই ডোন্ট (এটা আমরা করব না)।’
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ক্ষেত্রে কী হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, একই কথা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, তাহলে কয়টা টেলিভিশন চ্যানেল মরে যাবে। হুইচ ইজ ডিজায়ারেবল ফর দ্য কান্ট্রি (যেটা এই দেশের জন্য ঠিক আছে)। মারা যাবে। দুনিয়ার কোনখানে এতগুলো টেলিভিশন স্টেশন আছে? কোন দেশে?’
এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আইন তৈরি হয়নি। ওয়েজবোর্ড হচ্ছে খবরের কাগজের জন্য। সেই ব্যাপারে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আমরা খবরের কাগজের মালিকদের সঙ্গে বসেছিলাম। সমগ্র সংবাদপত্র শিল্পের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বেশির ভাগ পত্রিকা যেগুলো নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রকাশিত হচ্ছে না, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর যেগুলো সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে, তাদের জন্য ওয়েজবোর্ডের প্রয়োজন আছে কি না সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।