বিশেষ প্রতিবেদক:
রামুর চাকমারকুল এলাকা থেকে এক শিশুকে চাকরির কথা বলে চট্রগ্রাম নিয়ে গিয়ে পাচার করার অভিযোগে শফিউল আলম প্রকাশ বিকে আজম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পাচারের শিকার শিশুর মা মাছুদা খাতুন কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে গতকাল বুধবার মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের আগে ও পরে আদালত চত্ত্বর থেকেই লোকজন দিয়ে মামলার বাদিকে অপহরণের চেষ্টা চালান বিকে আজম। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আদালত চত্ত্বর ত্যাগ করেন বাদি। এখন আতঙ্কে চরম নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভূগছেন তিনি।
মামলার বাদি রামু ্উপজেলার চাকমারকুলের পশ্চিম শাহমদের পাড়ার মো. হোছনের স্ত্রী মাছুদা খাতুন জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর সাবেক পাড়ার মৃত মো. ইয়াছিন প্রকাশ ইয়াছিন মিস্ত্রি’র পুত্র শফিউল আলম প্রকাশ বিকে আজম গত ২০ মে রাত ১০ টার দিকে বাদি মাছুদা খাতুনের বাড়িতে যান। সেখানে বাদির পুত্র মো. ইসমাঈলকে (১২) চট্রগ্রামে চাকরির কথা বলে বিকে আজম তার গাড়িতে করে নিয়ে যান। কিন্তু ২৬ মে ফোন করে তার ছেলে কেমন আছে জানতে চাইলে বিকে আজম জানান-তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় মাছুদা খাতুন বিভিন্ন স্থানে ছেলের সন্ধান করে না পেয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ঘটনা অবহিত করেন। এক পর্যায়ে তিনি ছেলের ছবিসহ নিখোঁজ ডায়েরী করতে থানায় যেতে চাইলে তাতে বাধা দেন বিকে আজম। পরবর্তীতে উল্টো ভিকটিম ইসমাঈল, পিতা-মো. হোছন ও মা মাছুদা খাতুনের বিরুদ্ধে চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদে শালিস দায়ের করেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গত ১৮ জুলাই উভয় পক্ষকে উপস্থিত থাকতে নোটিশ দেন। সেখানে শুনানীর পর চেয়ারম্যান ভিকটিমকে হাজির করে দেয়ার জন্য বিকে আজমকে নির্দেশ দেন। বিকে আজম ভিকটিমকে হাজির করতে এক মাস সময় চান এবং ওই সময়ের মধ্যে হাজির করে দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এর পর পরই বিকে আজম বিভিন্নভাবে ও মোবাইলের মাধ্যমে ভিকটিমের মাকে ছেলের খোঁজ না করতে অনুরোধ করেন। বিনিময়ে তিনি মাছুদাকে একটি টমটম গাড়ি, একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া এবং নগদ তিন লাখ টাকা দেয়া হবে বলে প্রলোভন দেখাতে থাকেন। একই সাথে তার ছেলেকে আর খোঁজ না করে আপোষ-মিমাংসার জন্য চাপ দেন। ভিকটিমের মা মাছুদা খাতুন আরও জানান, বিকে আজমের এমন সন্দেহজনক কর্মকান্ড এবং বিকে আজমের অতীত ইতিহাস দেখে মনে হয় যে, তার ছেলেকে বিকে আজম পাচার করে দিয়েছে না হয় পাচারের জন্য গুম করে রেখেছে। যার কারণে তার ছেলেকে ফেরৎ চেয়ে আদালতে মামলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মাছুদা খাতুন অভিযোগ করেন, মামলা দায়ের করতে আদালতে গেলে সেখানে মামলা দায়েরের আগে ও পরে ৫/৬ জন লোক নিয়ে তাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। পরে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আদালত চত্ত্বর ত্যাগ করেন। তিনি এখন চরম নিরাপত্ত্বাহীনতায় এবং ন্যায় বিচার প্রাপ্তির শঙ্কায় ভূগছেন বলে জানান।
বাদির আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, ভিকটিমের মায়ের জবানবন্দি মতো তার আগ্রহে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুনানী শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিকে আজমের ইটভাটা থেকে বন্দি অবস্থায় শিশু শ্রমিকও উদ্ধার করেছিল আইনশৃংখলা বাহিনী। এছাড়া তিনি মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে প্রচার রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।