ক্রীড়া ডেস্ক:
‘ভয়েস কল’ হওয়ায় তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। কণ্ঠটাই শোনা যাচ্ছিল শুধু। কিন্তু কখনো কখনো একটা মানুষের উচ্ছ্বাস বুঝতে তাঁকে দেখতে হয় না। কণ্ঠই পুরো শরীরের হয়ে কথা বলে। কাল ফোনের ওপাশ থেকে মুমিনুল হকের কণ্ঠটাই তাঁর উচ্ছ্বাসটা বুঝিয়ে দিচ্ছিল। দিতেই হবে! অভিষেকের পর প্রথমবারের মতো টেস্ট স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ার এক দিনের মধ্যেই যে আবার দলে ফিরবেন, এটা কি স্বপ্নেও ভেবেছিলেন!
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য পরশু ঘোষিত ১৪ জনের বাংলাদেশ দলে ছিলেন না মুমিনুল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বাদ দিয়ে পরশু সংবাদ সম্মেলনেই প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। কিন্তু কাল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানালেন, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনের চোখের সংক্রমণ না সারায় তাঁর জায়গায় দলে ফেরানো হয়েছে মুমিনুলকে। বাদ পড়ার হতাশা, তারপর এক দিনের মধ্যে নাটকীয়ভাবে ফেরা—উচ্ছ্বাসটা তাই একটু বেশি মুমিনুলের, ‘অনেক ভালো লাগছে। বলে বোঝাতে পারব না।’
আগের দিন বাদ পড়ার খবরটা শুনে কেমন লাগছিল? উত্তরে খুঁজে পাওয়া গেল ছোটখাটো মানুষটার ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভীষণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ একজনকে, ‘যখন শুনলাম আমি দলে নেই, তাৎক্ষণিকভাবে মনে থেকে অন্য সব চিন্তাভাবনা ঝেড়ে ফেলেছি। আমার শুধু মনে হয়েছে, দলে থাকতে হলে আমাকে আরও ভালো খেলতে হবে। যে সংস্করণেই খেলি, যেভাবেই খেলি, আরও ভালো করা ছাড়া উপায় নেই। আমাকে যে করেই হোক, সেটা করতে হবে।’
ভীষণ দুঃসময়ে শক্ত থাকার এই শিক্ষাটা অবশ্য নিজের জীবন থেকেই পেয়েছেন মুমিনুল। টেস্ট অভিষেকের বছরখানেক আগে তাঁর মা মালেকা জয়নব মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ভুগে বাক্শক্তি হারিয়েছিলেন। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার কষ্টের চেয়েও যেটি অনেক বড় ধাক্কা হয়ে এসেছিল তাঁর জীবনে। সেই মা পরে কথা বলতে পেরেছেন। মায়ের মুখে কথা শোনার ওই আনন্দের তুলনায় দলে ফেরার এই আনন্দটা বড় নয় যদিও। কিন্তু এভাবে ফেরাটা তাঁকে ভালো করার একটা বাড়তি তাড়না তো বটেই। ফোনের ওপাশ থেকে মুমিনুলও সেটাই বললেন, ‘খেলার সুযোগ পেলে চেষ্টা করব অনেক অনেক ভালো খেলতে। সুযোগটা এমনভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব, যাতে আর কখনো বাদ পড়তে না হয়।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।