ডেস্ক নিউজ:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে ২০টি করণীয় কার্যক্রম তুলে ধরেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সমাজ। নির্বাচনী বিধি-বিধানে সংস্কার, কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুজন আয়োজিত এক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে এসব সুপারিশ পেশ করা করা হয়।

গোলটেবিল অনুষ্ঠানে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের আকার বড় হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের নমুনা দেখা যাচ্ছে না। একটি ভালো নির্বাচন আয়োজনে তিনি রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, গ্রহণযোগ্য মনোনয়ন পদ্ধতি, প্রশাসনের দলীয়করণ বন্ধ, নির্বাচন কমিশনের গঠন, নিরাপত্তা বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।

সাংবাদিক, কলামিস্ট সৈয়দ মকসুদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণে বোঝা যাচ্ছে, তারা অনেক অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাই তারা নানাজনকে ডেকে শক্তি সঞ্চার করার চেষ্টা করছে। এসব না করে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে বারবার বসে তাদের ভূমিকা কি থাকবে তা পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সবার সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব না হয়, তবে সে সরকারের অস্থিত্ব হুমকির মধ্যে থাকতে হবে। পাশাপশি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারলে আগামীতে উত্তর কোরিয়ার মতো বাংলাদেশের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা যাই বলি কমিশন তাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখে। অথচ এসব পরামর্শ আমলে নিয়ে একটি সুন্দর ও সবার গ্রহণযোগ্যা নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। দিন শেষে তার সুফল তারাই পাবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গোলটেবিল অনুষ্ঠানে আলোচকরা নির্বাচন কমিশনের করণীয়, আইন কাঠামো, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, মনোনয়নের লক্ষ্যে তৃণমূল থেকে প্যানেল তৈরির বিধানের প্রয়োগ, হলফনামা যাচাই-বাছাই ও ছকে পরিবর্তন, নির্বাচনী সহিংসতা রোধ, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন, দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, নির্বাচনী ব্যয়সীমা কমিয়ে আনা, নির্বাচনী বিরোধ দূরীকরণ, কমিশনে নিয়োগ আইন তৈরি, রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন ও বৈদেশিক শাখা তৈরি, গণমাধ্যমের ভূমিকা, কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টি, সরকারের স্মরণীয়, রাজনৈতিক দলের করণীয়, নাগরিক সমাজের করণীয় ও ভোটারদের করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।