জাগো নিউজ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজারে যাচ্ছেন। এতে যেন আলোর দিশা দেখছেন মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই অভিভাবক ভাবছেন তারা।
রোহিঙ্গাদের আশা, প্রধানমন্ত্রী এসে রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখলে দুঃখ-দুর্দশা খানিকটা দূর হবে। অন্তত সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক তৎপরতা ত্বরান্বিত করতে পারবেন বলে তাদের বিশ্বাস।
অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয় বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেখতে আসছেন এমনটি শুনে অসহায় রোহিঙ্গারা নিভে যাওয়া প্রদীপে যেন আলোর শিখা দেখতে পাচ্ছেন।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির তুমব্রু গ্রামে মিয়ানমার ঘেঁষে নো-ম্যান্সল্যান্ডে তাঁবু গেড়েছেন রোহিঙ্গা আরিফ। তুমব্রু ক্যাম্পে মাঝির (নেতা) ভূমিকাও রাখছেন তিনি। তিনি বলেন, নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের তাড়িয়েছে। সু চির সরকারই এখন বেশি অসহযোগিতা করছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। ভোটের রাজনীতির কারণেই সু চি আমাদের সঙ্গে বৈরী আচরণ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিভাবক মেনে তিনি আরও বলেন, অথৈ সাগরে জীবন তরী ভাসিয়ে অন্ধকার দেখছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন শুনে হালে পানি পেয়েছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখলেই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে সংকট নিরসনে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবেন।
আরেক রোহিঙ্গা সাদেকা বানু বলেন, সকাল থেকে মাইকিং করছে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন। শুনে শান্তি পাইছি। আমরা নিজ দেশেই যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে ব্যবস্থাই করবেন বলে আশা করি।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে আসবেন বলে সোমবার সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। মাইকে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকেও স্বাগত জানানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে সোমবার সকাল থেকে। হেলিকপ্টারে টহল দেয়া হচ্ছে।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরাও নিয়োজিত রয়েছেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি পরিদর্শনে উখিয়ার কুতুপালংয়ে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা।
অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে একদিনের পরিদর্শনে কক্সবাজার যাচ্ছেন বাংলাদেশে নিয়োজিত সব বিদেশি দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধিরা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রদূতদের সবাইকে ভাড়া করা প্লেনে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রাষ্ট্রদূতদের ওই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সফর করবেন। রাষ্ট্রদূতরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের সমস্যা সরেজমিনে দেখতে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন শুরুর পর এখন পর্যন্ত রাখাইন প্রদেশের তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।