মাহবুবা শিউলী :
বাঙ্গালী জাতি ইতিহাসে প্রবল কিন্তু ইতিহাস সংরক্ষণে দুর্বল। সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ইস্যু বিষয়ে একটু পিছনের ইতিহাস জানা দরকার। মিয়ানমার বা বার্মা স্বাধীন হয় ১৯৪৮ সালে। আরাকান ছিলো স্বাধীন রাজ্য। রোসাং শহর ছিলো রাজধানী। আরাকানের রাজ্যসভার কবি ছিলেন মহাকবি আলাওল। এই রাজ দরবারে বসেই লিখেছিলেন প্রথম ও শ্রেষ্ট কাব্য পদ্মাবতী।
স্বাধীনতার ৬৯ বছরে অসংখ্যবার বিভিন্ন ইস্যুতে বার বার আরাকান ও মুন্ডুতে নির্যাতন চালায় সামরিক জান্তা সেনা সরকার। ২৩ বছরে গৃহবন্দি সুচির বর্বর কাহিনীও রয়েছে। বার্মায় ১৯৬০ সালে যে নির্বাচন হয় সে সময় রাখাইন এলাকা হতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব ছিল। চারজন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে তিন জন ছিলেন মুসলিম। তাদের একজনের নাম সুলতান আহমেদ। যার ছেলে কেমেনিকে এ বছরের ২৯ এপ্রিল ইয়াঙ্গুনে হত্যা করা হয় বহু ইতিহাস বাদ।
তাহলে জাতীয় পর্যায়ে মিয়ানমারে ১৯৬০ সালে রোহিঙ্গারা সে দেশের নাগরিক ছিলো তা প্রমানিত। তবে আজ ২০১৭, ১৯৮২ কিংবা ১৯৯১ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের অত্যাচার, নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় কেন? ইতিহাস বলে জাপান–ব্রিটিশ যুদ্ধের সময় রোহিঙ্গারা ব্রিটিশের পক্ষে থাকায় জাপানি সৈন্যদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে সর্বপ্রথম প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে চলে আসে।
১৯৬৫ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তৎকালীন পাকিস্তান আমলে মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় জাতিগত দাঙ্গার কারণে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন সীমান্ত অতিক্রম করে এ দেশে চলে আসা শুরু করে। তবে তার কোনো সঠিক হিসেব কোথাও নেই। ১৯৮২ সালে কেড়ে নেয়া হয় তাদের নাগরিকত্ব। রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের (মুসলমান জনগোষ্ঠী) নাগরিক বিবেচিত মর্মে স্বীকার করছেনা মিয়ানমার সরকার।
১৯৮২ সালের বিতর্কিত এক আইনে তাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই থেকে তাদের ‘বেঙলি’ (বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশকারী) বলতে মিয়ানমার থেকে বিতাড়নের চেষ্টা চলছে। ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে অনুপ্রবেশ ছিলো মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমানের বিএনপি সরকারের আমলে (১৯৭৮) সালে এবং ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়া সরকারের আমলে সীমান্ত পেঁরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ব্যাপকহারে রোহিঙ্গার আগমন ঘটে। তখন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে চলে আসে। ভোটার হয়েছে অনেকে। এভাবে ১৯৯১ সালে ৫ লাখ, দফায় দফায় পরে সব মিলিয়ে ৯ লাখ মতো ছড়িয়ে গেছে সবুজ মানচিত্রে।
যদিও পুর্বে মিয়ানমার ছিলো একরোগা,এক দেশ,এক নীতিতে জাতিসংঘের বাহিরে থাকা দেশ। মাত্র ১০/১২ বছর হচ্ছে বার্মা নামক রাষ্ট্রটি বহির্বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে ব্যবসা বানিজ্য আর নিজেদের প্রতিনিধি রাখতে শুরু করে। জানা যাক এবার রাষ্ট্রনীতি।
মুলত মিয়ানমার সরকারের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট মন্ত্রানালয়,স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় নামে তিনটি গুরুত্বপুর্ন মন্ত্রানালয় সেনাবাহিনীর হাতে ন্যস্ত। সেখানে নোবেল বিজয়ী শাসক অং সান সুচি বা এনএলডি পার্টির কিছুই করতে পারবেনা। মিয়ানমার এখনো রিপাবলিক নয়। ফলে এই রাষ্ট্রের কাছে মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার চাওয়া বিমান বালার হাসি কিংবা অর্থহীন। সুচি গনতান্ত্রিক নেত্রী মানে হাস্যকর বিষয়। সেটা আন্তর্জাতিক কুটনীতিক মহল বেশ ভালোই জানে।
তবে আমরা যারা সাধারণ জনগন ইসলাম আর মানবতায় বিশ্বাসী তারা সুচিকে দায়ী করছি শুধুমাত্র। কেননা সুচি মুসলিমদের ভোটে আজ ক্ষমতায় কিন্তু সেটাও ভারী হয়ে গেছে ওর পক্ষে। একটা টু শব্দও সে করতে পারতেছেনা এসব পাপাচারের বিরুদ্ধে।
এখন মূল বিষয়ে আসা যাক দেশের স্বার্থে। আসলে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নয়। নির্যাতিত হচ্ছে মুসলিম আর মানবতা। আল্লাহর প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাঃ এর ভবিষ্যত বানী আজ অক্ষরে অক্ষরে প্রমানিত। আজ মুসলিমেরা পথে ঘাটে নির্যাতিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ সব দেশে। যারা ৫৭ বছর পুর্বে থেকেই মিয়ানমারের সংসদে ও রাষ্ট্রে সে দেশের নাগরিক ছিলো। তাদের হত্যা করে, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে নাগরিক বলে স্বীকার না করা সহজ বিষয় নয়!!
সংসদে বলতে শুনেছি,বাংলাদেশ মুসলিম বলে জায়গা দেয়নি। বাংলাদেশ সরকার বিপদগ্রস্ত মানুষকে মানুষ হিসাবে দেখে মানবিকতায়, অস্থায়ী ভিত্তিতে জায়গা দিয়েছে যেটা সরকারের দাবি। আমরা নিজেদের দেশে নিজ দেশের মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলে ৯/১১লাখ রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছি। যেটা একটা স্বাধীন দেশের জন্য বর্তমানে হুমকিস্বরুপ। বিষয়টা নিয়ে কমবেশি সবাইকে ভোগাচ্ছে।
কিন্তু সরকারের ওপর প্রচন্ড চাপ। তাছাড়া আমাদের জন্য তা অনেকটা ভয়াবহ হতে পারে। তারপরেও সবকিছু নিয়ে একটা অস্থির সময় পার করছে দেশ। এ বিষয়ে যা করার সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।দেশের মানুষের স্বার্থে সেটাই মনে করছি। মিয়ানমার কৌশলে বলে,এ জনগোষ্ঠী যদি মিয়ানমার নাগরিক বলে প্রমাণ দিতে পারে তবে গ্রহন করবে। কত কুটকৌশল তাদের মামা বাড়ির আবদার।
এবার ভেতরে আলোকপাত করা যাক। সোস্যাইল মিডিয়ার বদৌলতে অনেকের দাবি রোহিঙ্গারা নিজের ঘরে নিজেরা আগুন লাগিয়ে নাটক দেখাচ্ছে। বিশ্বমিডিয়াকে বোকা বানিয়ে ওদের চেয়ে তুলনামূলক উন্নত দেশ বাংলাদেশে প্রবেশ করার দুরন্ত কৌশল নিচ্ছে। এ বিষয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেক ভিডিও ইউটিউব ও হিউম্যান রাইটসের ওয়েব সাইটে ঘুরপাক খাচ্ছে। যে ভিডিও আমরা দেখছি তাতে সন্দেহ ফিরিয়ে দেওয়া যায়না। বিবিসি, দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় এ নিয়ে রিপোর্ট দেখেছি আমরা।
তারপরেও বাংলাদেশ সরকার যা করতে পারি তা সাময়িক। কেননা জাতি হিসাবে পূর্ব ইতিহাস পাতায় রোহিঙ্গাদের অতীত বড় বিস্তৃত। যাদের জন্য আজ আমরা কাঁদছি, যাদের কষ্টে, মানবতা দেখাচ্ছি তাদের বড় একটি অংশ ৭১ সালে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। যা হোক এসময় তা বলা অবান্তর। বিভিন্ন দেশে আজ রোহিঙ্গাদের কিছু অংশ প্রতিষ্ঠিত। তাদেরকে আমরা দেখছিনা কেন বাংলাদেশের পাশে। প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িয়ে সরকারকে সাহায্য করতে।
অথচ বাংলাদেশ সরকার ও দেশের জনগণ তা করে যাচ্ছে। অনেকের দাবি,আরাকান রাজ্যে প্রভাবশালীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে তারা আসেনি । প্রশ্ন রয়ে যায়,তাহলে রোহিঙ্গাদের পুরুষ গুলো কোথায়? যারা আসছে তাদের বেশির ভাগ নারী,শিশু ও বুড়া বয়ষ্ক কেন? সুতরাং পুরুষেরা কোথায় তা রহস্যঘেরা বিষয়। মনে হচ্ছে সেখানে প্রতিবাদ প্রতিঘাত চরমে রুপ নিচ্ছে । সব নির্যাতন আর অত্যাচার গরিবদের বিরুদ্ধে নয়তো। জানিনা কোনটা সত্য বড় নিষ্ঠুর আজ বাস্তবতা। দি গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক অলিভার হলমেস এর রিপোর্টে ও তা ফুটে ওঠেছে অনেকটা।
বর্তমান দৃশ্যপটে ৯ লাখ বার্মিজদের আস্তানা ও তাবু দেয়ার ফল স্বরূপ বাংলাদেশে আরেকটা শান্তিতে নোবেল আসলে অবাক হবার কিছু থাকবেনা। বিশ্বের কোন দেশ যা পারেনি সে ঝুঁকি বাংলাদেশ দেখাচ্ছে তার ফল অশুভ/শুভ সেটা ভবিষ্যত বলবে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ শেষে আটকে পড়া পাকিস্তানীদের এখনো পাকিস্তানে ফেরত নেয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এমনকি আমরা হয়তো ফেরত পাঠাতে পারিনি। যা বাংলাদেশের ঘাড়ের উপর এক প্রকার টিউমার ও মারাত্বক ক্যান্সার রুপে শিকড় গঁজিয়েছে বহু দুর।
এদিকে এই ৯ লাখ বার্মিজদের বার্মা ফেরত নিতে কতদিন সময় লাগবে জানিনা। মাত্র ১১দিনে ৫ লাখ প্রবেশ করেছে। এই অংক কষা বাদ দিয়ে আপাতত হিসাব করুন,প্রজনন প্রক্রিয়ার ফলে ৯ লাখ থেকে ৮০ লাখ হতে কতদিন লাগতে পারে। আর কত বছর কত যুগ লাগবে ১১দিনে আসা রোহিঙ্গাদের পুনরায় আরাকানে ফেরত পাটাতে!! কপি আনান কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হবে কবে!! অথচ ইতিহাস বলে রক্ত ছাড়া স্বাধীনতা আর নাগরিকত্ব আসেনা খেয়াল রাখা দরকার।
অন্যদিকে সুশীলদের দাবি, বাংলাদেশ একদিন কাঁদবে রোহিঙ্গা ক্রাইমে। নবসৃষ্ট আইএস সৃষ্টি হতে পারে এসব জনগোষ্ঠী হতে। আর এটাই বাস্তব, ভুল সিদ্ধান্তে সবুজ মানচিত্রে রোহিঙ্গা পতাকা একদিন পতপত করে বলবে, আমরা বাংলাদেশী। বিভ্রান্তি করছিনা ঘটনা প্রবাহে সে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কিনা বাংলাদেশ সতর্ক দৃষ্টি দরকার।
আহ্বান করতে চাই মানবিকতা অবশ্যই আমাদের থাকবে তবে সতর্ক থাকতে হবে। এটা একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও হতে পারে। আরাকানটা খনিজ সম্পদ আর তৈলে ভরা রাজ্য। অনেকের লোলুপদৃষ্টি থাকতেই পারে অসম্ভব নয়। এই আন্তর্জাতিক চক্রান্ত থেকে আমাদের দেশটাকে বাঁচাতে হবে।
প্রশ্ন থেকে যায়, এক সাথে ৭লাখ লোক কিভাবে হুট করে ১১ দিনে বাংলাদেশে প্রবেশ করল? যদি এভাবে মিয়ানমারের আর্মিরাও রোহিঙ্গা সেঁজে সীমান্তে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে তাহলে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবির ভূমিকা কি থাকবে?? একটা দেশে কোন সতর্কবার্তা বা স্থলসীমান্তে প্রবেশে কোন আভাস না দিয়ে ১১দিনে ৭ লাখ রোহিঙ্গা হজম করেছে বাংলাদেশ। বড় উদার রাষ্ট্র নয় কি?
৭ লাখ মানুষের খাদ্যঘাটতি চিন্তা করিনি আমরা,মানবতাকে বড় করে দেখেছি। চিন্তা করছি, চাইলেই বর্তমান সরকার ১০ টাকা কেজি দরে চাউল খাওয়াতে পারতো কিন্তু ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য পারছেনা। আজ মোটা চাউলও খেতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে? আগামী ২৫ বছরে কক্সবাজার তথা চট্টগ্রাম বিভাগের লোকজন কত দাঁড়াবে, তাদের বসবাসের জায়গা ও জনসংখ্যা অনুযায়ী কত হবে সেটাও বিবেচনায় রাখা উচিত।
এই মুহুর্তে সরকারের পদক্ষেপ কি? এত জনসংখ্যা যখন প্রবেশ করলো তবে নির্দিষ্ট জায়গায় বিজিবি কতৃক ঘেরাও করে রাখছেনা কেন? অন্যতায় সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা লক্ষ্যনীয়। জানি এই সব ইস্যুতে বিতর্কের শেষ হবেনা। অনেকে আমার বিরুদ্ধে ও বলবে। তবে রোহিঙ্গাদের একত্রিত করে রাখাই নিরাপদ মনে করছি। যাতে সাহায্য সহযোগিতা ও সমান ভাবে বরাদ্দ হয় জনগণ,সরকার ও জাতিসংঘ কতৃক।
এই মুহুর্তে সকল মুসলিম দেশ মিলে অতিদ্রুত জাতিসংঘের ওপর চাপ তৈরি করা। কেননা মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার মাইন পুঁতে রেখেছে। পলায়ন বা আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য মাইন পুঁতে রাখা কোন বিদ্রোহী মনোভাব? এ সময় যদি জাতিসংঘ সোচ্চার নাহয় তাহলে পুর্বের মতো মিয়ানমারের সেনারা ১মাস নির্যাতন বন্ধ রেখে পুনরায় হত্যাকান্ড চালাবে। চাপ সৃষ্টি করতে হবে ।
ফিরিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক আরাকানে সেইফজোন তৈরি করতে হবে। আর সেখানে যেনো ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। পরে আরাকান হতে মিয়ানমার নাসাকা ও সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক আরাকানে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আমার মতে মনে হচ্ছে এটাই সুফল মিলবে রোহিঙ্গাদের। এ ছাড়া বাংলাদেশে ওদের বেশিদিন রাখা নিরাপদ নয়।
এদিকে বিশ্ব বিবেক কি বলে আর সুচি কত সুন্দর মিথ্যাচার করে তাও স্পষ্ট। যেমন নোবেল পুরস্কার পাওয়া মানাবাধিকার কর্মী মালালা বলেছেন,লাখো মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে,আমরা চুপ থাকতে পারিনা। মিয়ানমারের সহিংসতা বন্ধে শক্ত অবস্থান দরকার। তিব্বতের আধ্যাত্বিক ধর্মগুরু দালাইলামা বলেছেন,বুদ্ধ ফের আবির্ভীত হলে রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া শাখার ডেপুটি ডাইরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেছেন,সুচি গনতন্ত্র রক্ষায় অলিখিত প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন কিন্তু আজ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। তুর্কী নেত্রী এমিনি বলেছেন,এমন বর্বর হত্যাকান্ড মেনে নেওয়া যায় না।
অথচ মিয়ানমারের শাসক অান সাং সুচি বলেছেন,কিছুই ঘটেনি এসব মিথ্যাচার। আর ভারতের মোদী বলেছেন,আমরা সুচির পাশে আছি। বিশ্বের দরবারে নোবেল বিজয়ী এই মহিলা এখন ড্রামাকুইন কিংবা রক্তপিপাসু দানবের খ্যাতি অর্জন করেছে। ধিক্কার জানাচ্ছি এমন শাসক আর শোষককে।
রোহিঙ্গা নিয়ে সরকারের ৫ জরুরি করণীয়: ১. প্রত্যেক শরণার্থীর হাতের আঙ্গুলের ছাপসহ (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি) ডিজিটাল রেজিস্ট্রিকরণ। ২. প্রত্যেক শরণার্থীকে শিবিরে থাকতে বাধ্য করা এবং শিবিরের বাইরে আসা কঠোরভাবে নিষেধ করা। ৩. রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধকরণই শুধু নয়, বাংলাদেশে তাদের চাকরি, ব্যবসা, দিনমজুরের কাজও অবৈধ ঘোষণা করা। ৪. শরণার্থী শিবিরে পর্যাপ্ত ত্রাণের পাশাপাশি জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রী সরবরাহ করা। বিদেশি ত্রাণ হিসেবেও এসব সামগ্রী পাঠাতে বলা। ৫. আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাতে মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রবেশ করা।
না হয় শত কষ্টের ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের সোনার বাংলাদেশকে রক্ষার পথ খুঁজতে হবে? কেননা অচিরেই সীমা ছাড়িয়ে যাবে সমস্যা সমাধান। সময় থাকতে সঠিক সিদ্ধান্তে দেশকে নিরাপদ রাখা সরকারের যেমন দায়িত্ব। তেমনি দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের মতামত জানানোর স্বাধীনতাও মৌলিক অধিকারে পড়ে। কারন দেশটা আমাদের ভবিষ্যত প্রজম্মের হাতে নিরাপদ রেখে যেতে চাই।
মাহবুবা শিউলী কলাম লেখকঃ সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি,কক্সবাজার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।