ইমাম খাইর, সিবিএন:
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে রাজনীতি নয়, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করা জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিছক অর্থনৈতিক নয়, জাতিগত সমস্যা। স্বদেশে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার। কিন্তু সেই অধিকার তাদের দিচ্ছেনা মিয়নমার সরকার। রোহিঙ্গা জাতিকে মানচিত্র থেকে মুছে দিতে পরিকল্পিত এগুচ্ছে দেশটির সর্বোচ্চ প্রশাসন। এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মোঃ শাহজাহান এসব কথা বলেছেন। শহরের অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে বিএনপির প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ৩ দিন আগে দলীয় একটি টীমসহ রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে কক্সবাজার আসেন বিএনপির তৃণমূল পুনর্গঠনের সমন্বয়ক মোঃ শাহজাহান। তৃতীয় দিনে স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে এখনো সহিংসতা থামেনি। সীমান্তের ওপারে শুধু আগুনের লেলিহান শিখা। প্রতিদিন নিরীহ মানবতার আর্তনাদ কান ভারী করে তুলেছে। রোহিঙ্গা পল্লীগুলোর করুন অবস্থা। এই অবস্থায় যারা নির্যাতি রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের ধন্যবাদ জানান বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতা।
তিনি দুঃখ করে বলেন, রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ একটি মানবিক কাজ। এ নিয়ে রাজনীতির কিছুই নেই। কিন্তু সরকার আমাদের ২২টি ত্রাণের ট্রাক আটকে দিয়ে মানবিক কর্মসুচিতে অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। এরপর আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে হলেও অসহায় মানুষের পাশে আমরা ছুটে গিয়েছি। একাজকে আমরা আত্ন পরিচয়ের ব্যনার হিসেবে দেখতে চাইনা। একারণে নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছি।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই ভাইসচেয়ারম্যান বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মানবিক দিক বিবেচনায় ত্রাণ কাজে সুযোগ দিন। জাতীয় ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করবেননা। সেনা বাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা নিয়ে আসুন। তিনি সংঘাতকালে মিয়ানমার থেকে চাল আমদানী করতে যাওয়ায় খাদ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। একইভাবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের দুর্দিনেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এই সময়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের উচিত ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি জানানো। কিন্তু ভারত তা না করে মিয়ানমারের বর্বরতার পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। সরকারের উচিত হবে ভারতকে বশে এনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
প্রেস ব্রিফিং-এ উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী প্রমুখ।
এতে বিএনপির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল রোহিঙ্গা বিধবা নারী ও অনাথ শিশুদের স্বাস্থ্য, খাদ্য, নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থার দাবী তুলেন। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশীদের পরিচালনায় প্রেসব্রিফিং এ বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং শামসুদ্দিন দিদার, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কক্সবাজার পৌর প্যানেল মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মনির উদ্দিন মনিরসহ কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।