ডেস্ক নিউজ:
পরিচয় গোপন করে সীমান্তে গিয়ে ছবি তোলা, বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মিয়ানমারের দুই সংবাদিক জামিনে মুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন মঞ্জুর করলে তারা কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই দুই সাংবাদিকের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
মিনজাইয়ার ও এবং হকুন লাট নামে মিয়ানমারের ওই দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার দেখানো হয় গত ১৩ সেপ্টেম্বর। ১৫ সেপ্টেম্বর তাদের জামিন আবেদন করা হলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেব তা নামঞ্জুর করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর এক সপ্তাহ পর জামিনে মুক্তি পেলেন তারা।
দুই সাংবাদিকের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, আমার পক্ষে কক্সবাজার বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশিষ বড়ুয়া ও অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ আদালতে শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন হওয়ার পর শুক্রবারেই দুই সাংবাদিককে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
মিনজাইয়ার ও এবং হকুন লাটকে গ্রেফতারের পর কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জিত বড়ুয়া জানিয়েছিলেন, দণ্ডবিধির ৪১৯ ও ১৭৭ নম্বর ধারা এবং ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ নম্বর ধারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। টুরিস্ট ভিসা গোপন করে সীমান্তে গিয়ে ছবি সংগ্রহ, অডিও-ভিডিও ধারণ ও রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য নেওয়ার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
মিনজাইয়ার ও এবং হকুন লাট জার্মানির হামবুর্গভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘জিও’তে কাজ করেন। জিও’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে খবর সংগ্রহের জন্য তারা সেপ্টেম্বরের শুরুতে কক্সবাজারে আসেন। এর মধ্যে মিনজাইয়ার আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন আলোকচিত্রী। তার ছবি নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হয়েছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ফটোগ্রাফি বিষয়ক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্টার ফটো’র প্রিন্সিপাল ফটোগ্রাফার সাইফুল হক অমিসহ মিয়ানমারের দুই ফটোসাংবদিককে হেফাজতে নেয় কক্সবাজার পুলিশ। ৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আফরুজুল হক টুটুল বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছিল। দুইজন বিদেশি সাংবাদিক টুরিস্ট ভিসায় এসে কাজের অনুমতি না নিয়ে কাজ করছিল। সাইফুল হক অমি তাদের সঙ্গে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের তিনজনকেই ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয় বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, ঢাকায় তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরে ১১ সেপ্টেম্বর সাইফুল হক অমি বাসায় ফিরলেও ১৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুই সাংবাদিককে এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।