আব্দুল আলীম নোবেল:
সম্প্রতি কক্সবাজার উখিয়া-টেকনাফের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার ব্যপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। অস্থির আর সংকট, উৎকন্ঠা প্রতিদিনের নিত্যসংঙ্গী এই জনপদের মানুষের। রোহিঙ্গাদের বেসমাল জীবন যাপনের করুণ এক চিত্র এখানে এখনো। এতে ভোগান্তিরর শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা। যেমনটি মানুষকে যুদ্ধের সময় এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। প্রকৃত অর্থে এখানে কোন যুদ্ধ নেই। কোন ইস্যুতে যুদ্ধ হোক কেউ চাই না। এর মাঝেও একটি অঘোষিত নীরব যুদ্ধের প্রতিচ্ছিবির মাঝে দিনাতিপাত করছে কক্সবাজারের মানুষ। শুনতে হচ্ছে হাজার হাজার ভিনদেশী কিছু নির্যাতি নিপীড়িত মানুষের আর্তনাদ। এই মানুষ গুলোকে কোনভাবে দুরে টেলে দিতে পারা য়ায় না। কারণ পানি, পাখি,মানবতা এদেরতো কোন সীমান্ত থাকতে পারে না।
এই ক্ষেত্রে সরকারও দারুন মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। স্যালুট মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যেখানে বিশ্ব বিবেক মুখ তুবুড়ে পড়েছে, সেখানে মানবতার নেত্রী বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে চলছে। এতে সাধুবাদ তবে অশ্রিত রোহিঙ্গার কারণে এলাকাবাসীর দুঃখটি বুঝতেও যেন কার্পণ্য না করে, এমনটি আবদার থাকবে মানবতার নেত্রীর কাছে। নানা শ্রেণীর পেশার মানুষরা দারুণভাবে মানবিকতা দেখিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের জন্য। এই ক্ষেত্রে আমরা অন্য এক মানবিক ভাঙ্গালীর পরিচয়ে বিশ্ব জুড়ে নতুনভাবে পরিচয় করে চলছি।
এত কিছুর মাঝেও সবকিছু মুখবুজে সহয্য করে যাচ্ছে মানব প্রেমিক এলাকাবাসী। কতটা কষ্টের মধ্যে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মুখের কথা না শুনলে বুঝতে পারবেনা কেউ। মাঠে সেনাবাহিনী, প্রতিদিন শত শত ত্রাণের গাড়ি, প্রশাসনসহ দেশীবিদেশী জিও, এনজিওর বার্তি ছাপ। লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গার মানব মানবীর ভীড় সামাল দিতে প্রতিদিন হিমশিম খাচ্ছে তারাও। নিদারুণ কষ্টে প্রচার করে চলছে দেশ বিদেশী মিডিয়ারা। এমন চিত্র দেখতে দেখতে এইতো পার হলো এক মাসেরও বেশি সময়। বিশ্বের শক্তিধর প্রতিষ্ঠান জাতি সংঘও অনেকটা ব্যর্থ বললে বাড়িয়ে বলা হবে বলে মনে করছি। তাহলে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে থামবে সঠিক কিছু বলা মুশকিল। এখনও অনিয়ন্ত্রীত রোহিঙ্গা জনস্রোত। মাঠে,ঘাটে,পাহাড়ে জঙ্গলে ঝুপড়ি ঘরের মাঝে অশান্তির অশ্রয়স্থল হলেও বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্টির প্রভাব পড়ছে স্থানীয়দের জীবন যাত্রায়। তারাতো মানুষ। রোহিঙ্গাদের মুখ দিয়ে ওপারের জান্তা সরকারের অমানবিক নির্যাতনের কথা শুনতে শুনতে কিছু মানুষ নামের অমানুষের কারণে এপারেও শুনতে হচ্ছে নানা নির্যাতনের খবর। একই সাথে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। মাত্র এক মাস আগেও সবকিছু ছিল ঠিকটাক। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফের চিত্র রাতে রাতে পাল্টে গেছে।
মিয়ানমার জান্তা সরকারের নির্যাতনের প্রাণ ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে অসহায় রোহিঙ্গারা। পালিয়ে আসতে গিয়ে নৌকা ডুবিসহ নানা কারণে অনুমানিক দুই শতাধিক রোহিঙ্গাদের লাশ হতে হয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমার ঘটনার পর থেকে নাফ নদী, বঙ্গোসাগরে হতভাগা রোহিঙ্গাদের শলিল সমাধী দেখতে হয়েছে এই পারের মানুষের। সর্বশেষ একসাথে আরো ২১ জন নারী পুরুষের লাশ উদ্ধার হয়েছে সম্প্রতি। মুখতুবুড়ে পড়েছে মানবতা। এই সব অপমৃত্যুর দায়ভার কে নিবে, এমন প্রশ্ন বিশ্বি বিবেকের কাছে?। এতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেকটা নীরব যুদ্ধের বাস্তবতায় রয়েছে কক্সবাজার জেলার মানুষ।
আব্দুল আলীম নোবেল
সাংবাদিক ও সমন্বয়ক, পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলন
০১৮২৪৪০৩০৮৩
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।