শাহেদ মিজান, সিবিএন:
‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য বড় বোঝা। এই বোঝা দীর্ঘস্থায়ী করার সুযোগ নেই। তাই কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের স্থায়ী করা যাবে না। যে কোনোভাবেই তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। ফেরত পাঠানোই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। এছাড়া আর যা কিছু হবে সব অস্থায়ী সমাধান।’ বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) জাতীয় সংগঠন এডাব আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়দের দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য, যাতায়াতসহ বিভিন্ন ধরণের চলাচল, গাড়িভাড়া, প্রাকৃতিক পরিবেশসহ নানাভাবে স্থানীয়রা সমস্যায় পড়েছেন। এই সমস্যা লাঘবে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। আর রোহিঙ্গারা দীর্ঘস্থায়ী হলে স্থানীয়দের সমস্যা আরো প্রকট হবে। তাই যে কোনোভাবে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

গতকাল বুধবার রাতে শহরের আবু সেন্টারে আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকার সভাপতিত্বে এই মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডাব এর চেয়ারপার্সন ও সিসিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক জয়ন্ত কুমার অধিকারী। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রোহিঙ্গা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সিআর আবরার। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডাব এর কার্যনির্বাহী সদস্য ও ইপসার প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, মুক্তির নির্বাহী পরিচালক বিমল কান্তি দে প্রমুখ। প্রেক্ষাপট আলোচনা শীর্ষক বক্তব্য রাখেন এডাব’র পরিচালক একেএম জসীম উদ্দীন

বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের রক্ষণাবেক্ষণে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় কাজ করা সংস্থারগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা হচ্ছে না। কাজ করতে গিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। এতে মুল কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। এই সমস্যা উত্তরণে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকারী না শরণার্থী বলবো তাও এখনো নির্ধারিত হয়নি। সরকার বলছে অনুপ্রবেশকারী আর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে শরণার্থী। তবে এর নীতিগত ব্যাখ্যা না থাকায় তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

অন্যদিকে আগত রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইডস, যক্ষাসহ নানা রোগব্যাধী বিরাজ করছে। এই রোগব্যাধী আরো বাড়ছে। তাদের এই সংক্রামক এই রোগব্যাধী এভাবে বেড়ে গেলে তা স্থানীয় লোকজনের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অত্যন্ত প্রকট। তাই রোহিঙ্গাদের রোগব্যাধী নিরোধের অত্যন্ত জোর দিতে হবে।